দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে রেলব্যবস্থার গুরুত্ব অনুধাবন করে বর্তমান সরকার ২০১১ সালে পৃথক রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে। বাংলাদেশ রেলওয়েকে আধুনিক ও যুগোপযোগী গণপরিবহন মাধ্যম হিসেবে সাজাতে এবং একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য গত এক দশকে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে। বিশেষত রেলওয়ে মাস্টারপ্ল্যান (২০১৫ থেকে ২০৪৫ সাল) প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী বেশকিছু মেগাপ্রকল্প হাতে নেয়াতে ত্বরিতগতিতে রেল নেটওয়ার্ক ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। দূরপাল্লার রেল যোগাযোগের পাশাপাশি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরকেন্দ্রিক বৈদ্যুতিক মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক বাস্তবায়ন করেছে। যার ফলে সামগ্রিকভাবে পুরো বাংলাদেশের রেলভিত্তিক যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ এবং ব্যবস্থাপনায় প্যারাডাইম শিফট হয়েছে এবং আমরা রেলবিপ্লবের একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি।
কেউ কি কখনো ধারণা করেছিল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার মানুষ সরাসরি ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগের মাধ্যমে যুক্ত হবে? প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বেশ কিছু প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বিশ্বের অন্যতম যোগাযোগ অবকাঠামো পদ্মা সেতু তৈরি হয়েছে। এখন আমরা ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা-যশোরের যে রেললিঙ্ক দেখছি, তা সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের অদম্য সাহসিকতা এবং পদ্মা বহুমুখী সেতুর জন্যই। এতটাই পরিকল্পিত ছিল, এই সেতু নির্মাণে যে নিচের রেলডেক স্লাব প্রস্তুত থাকায় মাত্র চার মাসের মধ্যে রেলসেতু পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়েছে। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর দুই পাশের রেল সংযোগ তৈরি করাও ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল।
দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য ছোট-বড় নদী এবং পানির সুষ্ঠু প্রবাহ ও জলবায়ুর প্রভাব বিবেচনায় রেখে জমি অধিগ্রহণসহ অসংখ্য প্রধান সেতু, ছোট সেতু, কালভার্ট, আন্ডারপাস, ওভারপাস তৈরি করতে হয়েছে। এই প্রথম দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা পাথরবিহীন উড়াল রেললাইনে যাত্রা করবে। এ পথে যুক্ত হওয়ায় নতুন স্টেশনে রাখা হয়েছে অত্যাধুনিক কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলিঙ্ক সিস্টেম, যা ট্র্যাকের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রেন চলাচলের নিরপত্তা নিশ্চিত করবে। সবচেয়ে বড় কথা ১৭২ কিলেমিটার এই রেলপথ ঢাকা থেকে খুলনার যাত্রার দূরুত্ব প্রায় ২১৫ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে, যা অনেকের কাছে ম্যাজিক মনে হতে পারে। কিন্তু এটাই এখন বাস্তবতা। বর্তমানে যেখানে ঢাকা থেকে খুলনার যাত্রা পশ্চিমাঞ্চল রেলের ঘুরপথে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে ১০-১২ ঘণ্টা লাগে, সেখানে নতুন রেলপথে ৩ ঘণ্টায় যশোর ও ৪ ঘণ্টায় খুলনা পৌঁছানো যাবে। এমনকি এই নতুন রেলপথ দেশীয় সংযোগের পাশাপাশি আন্তদেশীয় রুট হিসেবেও ব্যবহৃত হবে। ট্রান্স এশিয়ান করিডরে যুক্ত হওয়ায় ভবিষ্যতে পণ্য পরিবহনের সক্ষমতাও বাড়বে। সংগত কারণে এই বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ঘিরে বর্তমান সরকার দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ১৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে। তাই ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ছোট-বড় কারখানা স্থাপনে; যেমন তৈরি পোশাক, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি পণ্য এবং পাটজাত পণ্য ইত্যাদি। পাশাপাশি পচনশীল খাদ্যপণ্য ও মাছ ব্যবসারও প্রসার হবে। যদি এ অঞ্চলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা যায়, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৭.৫ লাখ নতুন চাকরির সংস্থান তৈরি হবে। এই অত্যাধুনিক রেলপথ দেশের প্রধানতম তিনটি সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দর (ভবিষ্যতে ঢাকা-যশোরের রেললাইনের একটি ব্রাঞ্চ লাইন কুয়াকাটা পর্যন্ত যাবে) এবং সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপলের সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্ন পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি করবে। যার ফলে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ১ শতাংশ যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আমি মনে করি যমুনার বুকে ৩০০ মি. উজানে জাইকার সহযোগিতায় চলমান বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে যেমন দুটি রেললাইন বা ১০০ বছরেরও বেশি পুরোনো হার্ডিঞ্জ সেতুতে যেমন দুটি রেললাইন আছে, পদ্মা রেলসেতুতে তদ্রূপ দুটি রেললাইনের সংস্থান থাকা উচিত ছিল, যা দেশীয় ও আন্তদেশীয় যাত্রী ও পণ্য পরিবহন পরিচালনার দক্ষতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিত।
অন্যদিকে আরেকটি প্রশ্ন আমাদের সবার মনেই অনেক সময় ঘুরপাক খায়- কেন বাংলাদেশের পর্যটন খাতের সম্ভাবনাকে আমরা কাজে লাগাতে পারলাম না। শ্রীলঙ্কা, ভারত, নেপাল ও মালদ্বীপের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) একটি বড় অংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। পর্যটনকে কেন্দ্র করে এশিয়ার অন্যান্য দেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আমাদের সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত আছে, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আছে। পাহাড়-নদীসহ পর্যটন আকর্ষণের অনেক উপাদান আছে। কিন্তু যোগাযোগ অবকাঠামোর দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে এতদিন দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট না হলেও তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে নির্মিত হয়েছে দোহাজারী-কক্সবাজার নতুন রেলপথ। শুধু পর্যটনই না, কক্সবাজারের লবণশিল্প, শুঁটকি, সামুদ্রিক মাছ, পান ব্যবসার প্রায় ১৫% সম্প্রসারণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে এই রেললিঙ্ক যুক্ত হলে রেলে কনটেইনার পরিবহনের ব্যাপক সুযোগ বাড়বে। দেশে চুয়াল্লিশটি জেলা রেলের আওতায় ছিল। দোহাজারী-কক্সবাজার এবং ঢাকা-মাওয়া-যশোর রেললিঙ্ক প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু চারটি জেলা (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও মানিকগঞ্জ) ছাড়া পুরো বাংলাদেশ রেল নেটওয়ার্কের মধ্যে চলে এসেছে। যার ফলে নিঃসন্দেহে বর্তমান সরকার যোগাযোগ খাতকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন দর্শনের পথে নিয়ে গেছে। ফলে নিরাপদ, আরামদায়ক ও ব্যয়সাশ্রয়ী রেল যোগাযোগ বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষকে শিক্ষা, চিকিৎসা, অন্যান্য সেবাসহ চাকরি বা ব্যবসার প্রয়োজনে দ্রুত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যেকোনো প্রান্তে পৌঁছে দেবে, যা বর্তমান সরকারের দূরদর্শিতারই প্রমাণ রেখেছে।
এখানে বলতেই হয়, সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনার ফলেই মাত্র ১৫ কিলোমিটার আখাউড়া-আগরতলা নতুন রেললিঙ্কটি দেশের নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ায় আগরতলা থেকে কলকাতার দূরত্ব প্রায় ১১০০ কিলোমিটার কমে গেছে। এতে করে যাত্রার সময় ৩১ ঘণ্টা থেকে ১০ ঘণ্টায় নেমে যাবে। এখন দরকার শুধু সুষ্ঠু পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং নীতিনির্ধারক পর্যায়ে বাণিজ্যের কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যাতে দুই দেশের জন্যই উইন-উইন পরিস্থিতি তৈরি হয়। বাংলাদেশের রেলওয়ের জন্য গেমচেঞ্জার আরেকটা প্রকল্প হতে পারে খুলনা-মোংলা রেলপথ। মোংলা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ হওয়ায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বহুগুণ বাড়বে। যার ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন সুযোগ তৈরিসহ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আমি সুষ্ঠু পরিকল্পনার সবচেয়ে বড় সৌন্দর্যটাই দেখি, যখন দূরপাল্লার যাত্রা এবং শহরকেন্দ্রিক যাত্রার মধ্যে একটা মেলবন্ধন তৈরি হয়। এ সরকারের হাত ধরেই শহরকেন্দ্রিক বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে। যেহেতু সারা দেশের সমস্ত রেলপথ কমলাপুরে এসে মিশেছে, দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা কমলাপুরে নামার পরে মেট্রোরেলযোগে শহরের মধ্যে অনায়াসে ঢুকতে পারবে সেটাও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এতে দূরপাল্লার রেলযাত্রীদের অতীতের ভোগান্তি অনেকটাই কমার পাশাপাশি তারা সময় ও ব্যয়সাশ্রয়ী গণপরিবহনের আওতায় চলে আসবে। তাই অত্যাধুনিক মেট্রোরেল শহরকেন্দ্রিক এবং দূরপাল্লার উভয় ধরনের যাত্রীদের দ্রুত চলাচলের টনিক হিসেবে কাজ করবে। আবার যেহেতু কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত ৬টি মেট্রোলাইনের মধ্যে ৪টি লাইন সরাসরি কমলাপুরে যুক্ত হবে এবং বাকি দুটি অন্যান্য লাইনের সঙ্গে আন্তঃসংযোগ ঘটাবে, ফলে কমলাপুর রেলস্টেশন ভবিষ্যতে মাল্টিমোডাল হাবে রূপান্তরিত হবে। সেটি মাথায় রেখেই ইতোমধ্যে রেলওয়ে বিভাগ একটি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের স্টাডি করছে। মাকড়সার জালের মতো মেট্রোলাইন পুরো নগরীতে ছড়িয়ে পড়লে যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি মাল্টিমোডাল হাব ঘিরে রেলের আয়ের একটি বড় সুযোগ তৈরি হবে। ফলে বিগত এক দশকে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হওয়া কয়েকশ কিলোমিটার রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন এবং বাণিজ্যিকভাবে কমলাপুর রেলস্টেশন ব্যবহারের ফলে আয়-ব্যয়ের যে ঘাটতিতে রেল অনেক দিন ধরে পড়ে আছে, তা থেকে কিছুটা উত্তরণ হবে বলে আমি ধারণা করছি।
বর্তমান সরকার পরিবেশবান্ধব রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে রূপকল্প, ২০৪১ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়েকে স্থল পরিবহন মাধ্যমগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেছে। তাই নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নিঃসন্দেহে রেলবিপ্লব ঘটেছে। এখন প্রশ্ন হলো, এই বিশাল নেটওয়ার্ক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কেমন হওয়া উচিত, যাতে দেশের সাধারণ জনগণ দীর্ঘমেয়াদি সেবা পায়। এটাই টেকসই উন্নয়নের মূল লক্ষ্য। বিনিয়োগ হবে একবার কিন্তু সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি রেলওয়ে বিভাগকেও কৌশলী হতে হবে কীভাবে রেলের আয় বাড়ানো যায়।
আমি মনে করি নতুন রেল নেটওয়ার্ক টেকসই করতে হলে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা, ক্যারেজ ও ওয়াগন ওয়ার্কশপগুলোকে পুনরায় জীবিত এবং আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে। নতুন রোলিং স্টকগুলো (লোকোমোটিভ, ক্যারেজ, ওয়াগন) নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণসহ দক্ষ টেকনিশিয়ান নিয়োগ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে হবে। নিয়োগকৃত টেকনিশিয়ানদের নিয়মিতভাবে দেশে-বিদেশে আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি নতুন রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া আধুনিক স্টেশনগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য স্মার্ট জনবল নিয়োগ দিতে হবে। স্মার্ট হিউমেন রিসোর্স উইথ লট অব নলেজ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা গেলে অতি দ্রুত দেশের রেল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা স্বর্ণযুগে প্রবেশ করবে। যেহেতু ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা-যশোর করিডরে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎচালিত ট্রেন পরিচালনার সুযোগ আছে, সেহেতু কম খরচে দ্রুত ও বেশি ওজন পরিবহনে সক্ষম বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগেই আমাদের দ্রুত প্রবেশ করা উচিত, যা অনেকটাই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহযোগী ভূমিকা রাখবে। সর্বোপরি সরকারকে আমি বলব বিগত এক যুগে রেল নেটওয়ার্ক যেভাবে সম্প্রসারণ হয়েছে, সে হিসাবে রেলকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সর্বোচ্চ প্রোডাক্টিভ করতে হলে প্রচুর গবেষণা হওয়া উচিত। সেই লক্ষ্যে দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের রেলওয়ে রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থাপন উচিত। তবে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে দ্রুত দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষায়িত রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ খোলা যেতে পারে বলে আমি মনে করি।
লেখক: পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
Post a Comment